ঢাকা ০২:২৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঢাকা-১৮ এর শূন্য আসনে অনেকের প্রচারণা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:৫৩:৫০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২০ জুলাই ২০২০
  • ১৬৩ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মরহুম সাহারা খাতুনের মৃত্যুর পর রাজধানী ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনী এলাকা ঢাকা-১৮ আসন এখন খালি। সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার কারণে আগামী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে।

এ অবস্থায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও  প্রধান বিরোধী দল বিএনপি থেকে বেশ কয়েকজন প্রার্থী মনোনয়ন পেতে বেশ তৎপর। এ লক্ষ্যে প্রার্থীরা সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমের প্রচারণায় নিজেদের পক্ষে অনেক কিছু লিখছেন। তাদের এমন প্রচারণায় দল দুটির নেতাকর্মীরাও পড়েছেন ভাবনায়। এরই মধ্যে নিজের পক্ষে মনোনয়ন আনতে লবিংও চলছে জোরেশোরে।

সরকারি দল আওয়ামী লীগ থেকে এখানে প্রায় ১২ বছর এমপি ছিলেন সদ্যপ্রয়াত সাহারা খাতুন। এ মাসের শুরুতে থাইল্যান্ডের বামরুনগ্রাথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। তার মৃত্যুর পর স্থানীয় আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন উপনির্বাচনে অংশ নিতে তৎপর হয়েছেন।

স্থানীয়দের বাইরে এখান থেকে নির্বাচন করতে পারেন দুজন ব্যবসায়ীও। এছাড়া প্রয়াত এমপি সাহারা খাতুনের পরিবার থেকে নির্বাচন করতে চান তারই একজন রিলেটিভ। তবে দীর্ঘ এক যুগ পর আসনটিতে স্থানীয়দের থেকে নমিনেশন নিতে এবার একাট্টা সবাই। এ নিয়ে স্থানীয় নেতৃবৃন্দ এরই মধ্যে আওয়ামী লীগের হাইকমান্ডে বার্তা দিচ্ছেন। তারা বলছেন, স্থানীয়দের মধ্যে এখন অনেকেই এমপি হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছেন।

দলীয় হাইকমান্ড সূত্রও জানায়, ঢাকা শহরে নতুন করে কোন অপরিচিত ব্যক্তিকে নমিনেশন দিয়ে রিস্ক নিতে চায় না দল। কারণ হিসেবে জানা গেছে, সামনের জাতীয় নির্বাচন ও বিরোধী দলকে মাথায় রেখে এমন চিন্তা করছে আওয়ামী লীগ।

দলীয় পদ-পদবিতেও তারা যথেষ্ট এগিয়েছেন। তাদের মধ্যে এবার সর্বাধিক আলোচনায় আছেন আলহ্বাজ হাবিব হাসান। ইতিপূর্বেও তিনি স্থানীয়দের মতামতে সবার থেকে এগিয়ে ছিলেন। তারপরেই আছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের আরেক পরিচিত নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা তোফাজ্জাল হোসেন।

নিজের মনোনয়নের ব্যাপারে হাবিব হাসান বলেন, আমি গত তিনটি নির্বাচনেই দলীয় মনোনয়ন প্রার্থী ছিলাম, দল আমাকে দেয়নি, এতে আমার দুঃখ নেই। এবারও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যেই সিদ্ধান্ত নিবেন, সেটা আমি এবারও মেনে নিবো।

বিএনপি থেকে আসনটিতে গত নির্বাচনের প্রার্থী ছিল জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট থেকে। এবার তাদের সে রকম আনাগোনা দেখা যাচ্ছে না। তবে দলীয় মনোনয়ন নিতে তৎপর থাকা বিএনপি নেতারা মৃত্যুজনিত আসন শূন্য হওয়ার বিষয়টিকে সুযোগ হিসেবে দেখছেন। তাই নিজেরা এখনই বেশ জোরালোভাবে মাঠ এবং বলয় রক্ষায় ব্যস্ত সময় পার করছেন।

এ আসনে নির্বাচন করার জন্য বিএনপির সহযোগী সংগঠন যুবদলের নগর উত্তর সভাপতি এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন আগে থেকেই সক্রিয়। তার এ সক্রিয়তা নির্দিষ্ট একটি বলয়ে সীমাবদ্ধ থাকলেও কখনও সিনিয়র পর্যায়ে প্রভাব ফেলতে পারেননি।

২০১৪ নির্বাচনে অংশ না নেওয়া এবং পরের নির্বাচনে কামরুল ইসলাম নির্বাচনে না আসায় যুবনেতা জাহাঙ্গীর ভেতর ভেতর এমপি নির্বাচন করার ব্যাপক প্রস্তুতিতে ছিলেন। তারই ধারাবাহিকতায় গত নির্বাচনে জাহাঙ্গীর হোসেন ও অরেক ব্যবসায়ী নেতা বাহাউদ্দীন সাদীকে দলীয় চিঠি দেওয়া হয়। ব্যবসায়ী নেতা নিজের ব্যক্তিগত কারণে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান। এ অবস্থায় দলের একক চিঠি হাতে রেখেও নিজের জন্য কিছু করতে পারেননি এস এম জাহাঙ্গীর। ফলস্বরুপ জোট থেকে অখ্যাত এক ব্যক্তি ধানের শীর্ষ নিয়ে নির্বাচন করে এ আসনের নেতাকর্মীদের মন ভেঙ্গে দেয়।

পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সেই যুবনেতা জাহাঙ্গীর আবারও মাঠে আসলেও এবার পরিস্থিতি অনেকটাই প্রতিকূল। সাবেক মন্ত্রী কামরুল ইসলামের ঘনিষ্ঠ অনুসারী, মূল দলের সিনিয়র নেতা ও শিল্পপতি এম কফিল উদ্দিন আহম্মেদ নির্বাচনী মাঠে ভালোভাবে নেমেছেন।

তবে এবারের উপ-নির্বাচন সামনে রেখে এখনো অনেক প্রার্থী মাঠে নামার অপেক্ষায় আছে বলে জানা গেছে। শেষ পর্যন্ত আড়ালে থাকা এসব নেতারা মাঠে আসলে নির্বাচনকেন্দ্রিক অনেক হিসাব পাল্টে যেতে পারে।

আড়ালে থাকা নেতাদের অন্যতম হচ্ছেন তরুণ ব্যবসায়ী বাহাউদ্দীন সাদী। তিনি নিজের বা তার বলয়ের লোকজনের তৎপরতা এখনো চোখে পড়েনি। বিএনপির হাইকমান্ড থেকে সিগন্যাল পেলে খুব শিগগির মাঠে নামতে পারেন।

মাঠে নামার বিষয়ে বাহাউদ্দীন সাদী বলেন, আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এই দুর্যোগ ও সংকটকালীন মুহূর্তে নির্বাচনে যাওয়ার থেকেও জনগণের পাশে দাঁড়ানোর বিষয়টিকেই প্রাধান্য দিচ্ছেন। আমরা সেই সিদ্ধান্তের প্রতি সম্মান রেখে আপাতত প্রচার বন্ধ রেখেছি, তবে যে কোন সময় পূর্ণশক্তিতে প্রচার-প্রচারণা চালাবার মতো সাধ্য এবং সামর্থ্যে দুটোই আমাদের আছে ।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

ঢাকা-১৮ এর শূন্য আসনে অনেকের প্রচারণা

আপডেট টাইম : ১২:৫৩:৫০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২০ জুলাই ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মরহুম সাহারা খাতুনের মৃত্যুর পর রাজধানী ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনী এলাকা ঢাকা-১৮ আসন এখন খালি। সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার কারণে আগামী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে।

এ অবস্থায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও  প্রধান বিরোধী দল বিএনপি থেকে বেশ কয়েকজন প্রার্থী মনোনয়ন পেতে বেশ তৎপর। এ লক্ষ্যে প্রার্থীরা সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমের প্রচারণায় নিজেদের পক্ষে অনেক কিছু লিখছেন। তাদের এমন প্রচারণায় দল দুটির নেতাকর্মীরাও পড়েছেন ভাবনায়। এরই মধ্যে নিজের পক্ষে মনোনয়ন আনতে লবিংও চলছে জোরেশোরে।

সরকারি দল আওয়ামী লীগ থেকে এখানে প্রায় ১২ বছর এমপি ছিলেন সদ্যপ্রয়াত সাহারা খাতুন। এ মাসের শুরুতে থাইল্যান্ডের বামরুনগ্রাথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। তার মৃত্যুর পর স্থানীয় আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন উপনির্বাচনে অংশ নিতে তৎপর হয়েছেন।

স্থানীয়দের বাইরে এখান থেকে নির্বাচন করতে পারেন দুজন ব্যবসায়ীও। এছাড়া প্রয়াত এমপি সাহারা খাতুনের পরিবার থেকে নির্বাচন করতে চান তারই একজন রিলেটিভ। তবে দীর্ঘ এক যুগ পর আসনটিতে স্থানীয়দের থেকে নমিনেশন নিতে এবার একাট্টা সবাই। এ নিয়ে স্থানীয় নেতৃবৃন্দ এরই মধ্যে আওয়ামী লীগের হাইকমান্ডে বার্তা দিচ্ছেন। তারা বলছেন, স্থানীয়দের মধ্যে এখন অনেকেই এমপি হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছেন।

দলীয় হাইকমান্ড সূত্রও জানায়, ঢাকা শহরে নতুন করে কোন অপরিচিত ব্যক্তিকে নমিনেশন দিয়ে রিস্ক নিতে চায় না দল। কারণ হিসেবে জানা গেছে, সামনের জাতীয় নির্বাচন ও বিরোধী দলকে মাথায় রেখে এমন চিন্তা করছে আওয়ামী লীগ।

দলীয় পদ-পদবিতেও তারা যথেষ্ট এগিয়েছেন। তাদের মধ্যে এবার সর্বাধিক আলোচনায় আছেন আলহ্বাজ হাবিব হাসান। ইতিপূর্বেও তিনি স্থানীয়দের মতামতে সবার থেকে এগিয়ে ছিলেন। তারপরেই আছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের আরেক পরিচিত নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা তোফাজ্জাল হোসেন।

নিজের মনোনয়নের ব্যাপারে হাবিব হাসান বলেন, আমি গত তিনটি নির্বাচনেই দলীয় মনোনয়ন প্রার্থী ছিলাম, দল আমাকে দেয়নি, এতে আমার দুঃখ নেই। এবারও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যেই সিদ্ধান্ত নিবেন, সেটা আমি এবারও মেনে নিবো।

বিএনপি থেকে আসনটিতে গত নির্বাচনের প্রার্থী ছিল জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট থেকে। এবার তাদের সে রকম আনাগোনা দেখা যাচ্ছে না। তবে দলীয় মনোনয়ন নিতে তৎপর থাকা বিএনপি নেতারা মৃত্যুজনিত আসন শূন্য হওয়ার বিষয়টিকে সুযোগ হিসেবে দেখছেন। তাই নিজেরা এখনই বেশ জোরালোভাবে মাঠ এবং বলয় রক্ষায় ব্যস্ত সময় পার করছেন।

এ আসনে নির্বাচন করার জন্য বিএনপির সহযোগী সংগঠন যুবদলের নগর উত্তর সভাপতি এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন আগে থেকেই সক্রিয়। তার এ সক্রিয়তা নির্দিষ্ট একটি বলয়ে সীমাবদ্ধ থাকলেও কখনও সিনিয়র পর্যায়ে প্রভাব ফেলতে পারেননি।

২০১৪ নির্বাচনে অংশ না নেওয়া এবং পরের নির্বাচনে কামরুল ইসলাম নির্বাচনে না আসায় যুবনেতা জাহাঙ্গীর ভেতর ভেতর এমপি নির্বাচন করার ব্যাপক প্রস্তুতিতে ছিলেন। তারই ধারাবাহিকতায় গত নির্বাচনে জাহাঙ্গীর হোসেন ও অরেক ব্যবসায়ী নেতা বাহাউদ্দীন সাদীকে দলীয় চিঠি দেওয়া হয়। ব্যবসায়ী নেতা নিজের ব্যক্তিগত কারণে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান। এ অবস্থায় দলের একক চিঠি হাতে রেখেও নিজের জন্য কিছু করতে পারেননি এস এম জাহাঙ্গীর। ফলস্বরুপ জোট থেকে অখ্যাত এক ব্যক্তি ধানের শীর্ষ নিয়ে নির্বাচন করে এ আসনের নেতাকর্মীদের মন ভেঙ্গে দেয়।

পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সেই যুবনেতা জাহাঙ্গীর আবারও মাঠে আসলেও এবার পরিস্থিতি অনেকটাই প্রতিকূল। সাবেক মন্ত্রী কামরুল ইসলামের ঘনিষ্ঠ অনুসারী, মূল দলের সিনিয়র নেতা ও শিল্পপতি এম কফিল উদ্দিন আহম্মেদ নির্বাচনী মাঠে ভালোভাবে নেমেছেন।

তবে এবারের উপ-নির্বাচন সামনে রেখে এখনো অনেক প্রার্থী মাঠে নামার অপেক্ষায় আছে বলে জানা গেছে। শেষ পর্যন্ত আড়ালে থাকা এসব নেতারা মাঠে আসলে নির্বাচনকেন্দ্রিক অনেক হিসাব পাল্টে যেতে পারে।

আড়ালে থাকা নেতাদের অন্যতম হচ্ছেন তরুণ ব্যবসায়ী বাহাউদ্দীন সাদী। তিনি নিজের বা তার বলয়ের লোকজনের তৎপরতা এখনো চোখে পড়েনি। বিএনপির হাইকমান্ড থেকে সিগন্যাল পেলে খুব শিগগির মাঠে নামতে পারেন।

মাঠে নামার বিষয়ে বাহাউদ্দীন সাদী বলেন, আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এই দুর্যোগ ও সংকটকালীন মুহূর্তে নির্বাচনে যাওয়ার থেকেও জনগণের পাশে দাঁড়ানোর বিষয়টিকেই প্রাধান্য দিচ্ছেন। আমরা সেই সিদ্ধান্তের প্রতি সম্মান রেখে আপাতত প্রচার বন্ধ রেখেছি, তবে যে কোন সময় পূর্ণশক্তিতে প্রচার-প্রচারণা চালাবার মতো সাধ্য এবং সামর্থ্যে দুটোই আমাদের আছে ।